দিনের আলো এবং রাতের আঁধার সম্পর্কে আল-কুরআনের ভাষ্য
দিন আর রাতের পরিবর্তন মানুষের জন্য এক বড় রহমত। যদি দিন আর রাত না হত ? বা রাত আর দিন না হত? মানুষের জন্য এ জগতে টিকে থাকা কতটা কষ্টকর হত?
আল কুরআনে রাত দিন সম্পর্কে বর্ণনা :
يُقَلِّبُ اللهُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ ، إِنَّ فِي ذَلِكَ لَعِبْرَةً لِأُولِي الْأَبْصَارِهِ
“আল্লাহ্ দিন ও রাতের পরিবর্তন ঘটান। এতে অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন লোকদের জন্য চিন্তার উপকরণ রয়েছে।”-(সূরা আন নূর : ৪৪)
وَايَةٌ لَهُمُ الَّيْلُ نَسْلَخُ مِنْهُ النَّهَارَ فَإِذَا هُمْ مُظْلِمُونَ (يس : ٣٧)
“তাদের জন্য আরেকটি নিদর্শন হচ্ছে রাত। আমি তা থেকে দিনকে অপসারণ করি তখনই অন্ধকার তাদেরকে ঢেকে নেয় ।”(ইয়াসীন : ৩৭)
وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الَّيْلَ لِبَاسًا والنَّوْمَ سُبَاتًا وَجَعَلَ النَّهَارَ نُشُوراه
“তিনিই তো আল্লাহ্ যিনি রাতকে করেছেন আবরণ, নিন্দ্রাকে করেছেন বিশ্রাম এবং দিনকে করেছেন চলাচলের জন্য ।”-(সূরা ফুরকান : ৪৭)
وَهُوَ الَّذي جَعَلَ الَّيْلَ وَالنَّهَارَ خَلْفَةُ لَمَنْ أَرَادَ أَنْ يُذَكَّرَ أَوْ أَرَدَ شُكُورًاه
“তিনিই আল্লাহ্ যিনি রাত দিনকে একে অপরের পিছে আগমনকারী বানিয়েছেন । এতে ঐ সমস্ত লোকের জন্য শিক্ষা রয়েছে যারা অনুসন্ধিৎসু ও কৃতজ্ঞ।”-(সূরা আল ফুরকান : ৬২)
اَلَمۡ یَرَوۡا اَنَّا جَعَلۡنَا الَّیۡلَ لِیَسۡکُنُوۡا فِیۡهِ وَ النَّهَارَ مُبۡصِرًا ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۸۶﴾
“তারা কি দেখে না, আমি রাতকে সৃষ্টি করেছি তাদের বিশ্রামের জন্য এবং দিনকে করেছি আলোকময়। নিশ্চয় এতে তাদের জন্য নিদর্শন আছে যারা মু'মিন।”
-(সূরা আন নামল : ৮৬)
আমরা প্রতিদিন দেখি বিশাল উজ্জ্বলতা নিয়ে সূর্য উদিত হয়। পৃথিবীর প্রতিটি অণু-পরামাণু সে আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। কিন্তু কয়েক ঘন্টা পর দেখা যায় সূর্যকে আড়াল করে দেয়া হচ্ছে, সাথে সাথে আলোকিত একটি দিনের অবসান ঘটে।
রাত তার অন্ধকারের চাদর দিয়ে সবকিছু ঢেকে দেয়। আবার কয়েক ঘন্টা বিরতির পর দেখা যায় পূর্ব আকাশ রাঙিয়ে সূর্য উঁকি দিচ্ছে। দেখতে না দেখতে গোটা পৃথিবীকে আলোর বন্যায় ভাসিয়ে দেয় ৷ লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীর বুকে সূর্যের এ লুকোচুরি চলছে। কই সামান্য ক্ষণের জন্যও তো এর ব্যতিক্রম ঘটেনি ? মাঝরাতে দিন, মধ্যাহ্নে রাতের আগমন কখনো হয়নি ।
রাত দিনের আবর্তনের প্রভাব মানুষকে পর্যন্ত প্রভাবিত করে থাকে । দিনের আলোতে মানুষ রুটি-রুজির সন্ধানে ব্যস্ত থাকে, যখনি রাতের আগমন ঘটে তখন মানুষ সবকিছু বিসর্জন দিয়ে রাতের কোলে ঢলে পড়ে বিশ্রামের জন্য । তারপর সে হয়ে ওঠে ঝরঝরে, তরতাজা ।
এতো কিছুর পরও কি মানুষ তাঁর স্রষ্টা সম্পর্কে বেখবর থাকতে পারে ? চিন্তার দ্বারে কি এগুলো করাঘাত করে না ?