নিয়ামতের শোকর করাই প্রকৃত সৌজন্য। আল্-কুরআনের শিক্ষা

নিয়ামতের শোকর করাই প্রকৃত সৌজন্য।  আল্-কুরআনের শিক্ষা

মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতাই প্রকৃত সৌজন্য

আল্লাহ তাআলা আমাদের তাঁর নিয়ামতে ডুবিয়ে রেখেছেন। আমাদের চারপশেই মহান আল্লাহর নিয়ামত আর নিয়ামত। মহান আল্লাহ বলেন- 

 هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً لَكُم مِّنْهُ شَرَابٌ وَمِنْهُ شَجَرٌ فِيهِ تُسِيمُونَ . يُنبتُ لَكُم به الزرع وزيتون والنخيل والْأَعْتَابَ وَمِنْ كُلِّ الثَّمَرُتِ إِنَّ فِي ذلك لأية لقوم يتَفَكَّرُونَ ، وَسَخَّرَ لَكُمُ اليلَ وَالنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ ، والنُّجُومُ مُسَخَّرَتْ بِأَمْرِهِ ، إِنَّ فِي ذَلِكَ لايت لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ وَمَا ذَرَأَ لَكُمْ فِي الْأَرْضِ مُخْتَلِفًا أَلْوَانُهُ ، إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَةٍ لِقَوْمٍ يُذْكُرُونَ وَهُوَ الَّذِي سَخَّرَ الْبَحْرَ لِتَأْكُلُوا مِنْهُ لَحْمًا طَرِيًّا وَتَسْتَخْرِجُوا مِنْهُ حِلْيَةٌ تَلْبَسُونَهَا ، وتَرَى الْفُلْكَ مَوَاخِرَ فِيهِ وَلِتَبْتَغُوا مِنْ فَضْلِهِ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ (النحل : ١٠-١٤)

তিনি তোমাদের জন্য আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন। এ পানি তোমরা পান করো এবং এ থেকেই উদ্ভিদ উৎপন্ন হয়, যেখানে তোমরা পশু চরিয়ে থাকো। এ পানিতে ফসল, যয়তুন, খেজুর, আঙ্গুর ও নানা ধরনের ফল উৎপন্ন হয়। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শন আছে। 

তিনি তোমাদেরই কাজে নিয়োজিত করেছেন—রাত, দিন, সূর্য এবং চাঁদকে। তারকারাজিও তাঁরই বিধানে আবদ্ধ। যাদের বুদ্ধি-বিবেচনা আছে তাদের জন্য এগুলো নিদর্শন স্বরূপ। 

তোমাদের জন্য পৃথিবীতে যেসব রঙ বেরঙের বস্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলোতেও নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা চিন্তা- ভাবনা করে। তিনি সমুদ্রকেও তোমাদের মুঠোতে এনে দিয়েছেন, যাতে তা থেকে তোমরা তাজা মাংস খেতে পারো এবং সেখান থেকে বের করতে পারো পরিধেয় অলংকার। সেখানে পানিকে বিদীর্ণ করে জলযান- সমূহ চলতে দেখো। কাজেই তোমরা আল্লাহ্র কৃপা অন্বেষণ করো, হতে পারে এভাবেই তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।”

-(সূরা আন নাহল : ১০-১৪ )


ايت- ঐ নিদর্শনকে বলা হয় যা কোন বস্তুর নিগূঢ় তত্ত্ব বের করে দেয়। যা দৃষ্টিগোচর হওয়া মাত্র ঐ বস্তুর রহস্যসমূহ উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। কোথাও পদচিহ্ন থাকলে বুঝা যায় এ পথে একজন মানুষ হেঁটে গেছে। কোথাও অনেক কবর দেখা গেলে মনে হয় এখানে চিরনিদ্রায় শায়িত জনবসতি, একদিন সবাইকে এদের সাথে শামিল হতে হবে। 

কোথাও যদি জীর্ণ বাড়ী, টুটা-ফাটা পরিত্যক্ত আসবাবপত্র ইত্যাদি দৃষ্টিগোচর হয় তখন একটি কথা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে মনের মাঝে ঝিলিক দিয়ে ওঠে যে, এখানে কোন এক সময়ে জনবসতি ছিল। তেমনিভাবে আসমান ও জমিনের মধ্যে অগণিত নিয়ামত এই নিদর্শনের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় যে, এ বিশ্বজাহানের একজন প্রতিপালক এবং নিয়ন্ত্রক আছেন। যিনি অসীম দয়ালু, অযাচিত দাতা, সমস্ত রহম ও করমের আধার। 

যিনি শুধু মানুষের জন্য এ বিশাল পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। এ সমস্ত বস্তু আপনা আপনিই তাঁর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। 

তাই প্রতিটি মানুষের কর্তব্য এমন মহান স্রষ্টা ও প্রতিপালকের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা এবং তাঁর প্রদত্ত নিয়ামতের যথাযথ মর্যাদা দেয়া।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url