আলেমদের চলমান সংকটে আগামীর ওয়াজ-মাহফিল ভাবনা; বক্তা ও আয়োজকদের করণিয় ✍মাওলানা রুহুল আমীন সাদী

 

মাওলানা রুহুল আমীন সাদী (সাইমূম সাদী) বর্তমানে একজন জনপ্রিয় ইসলামপন্থী সোস্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন চিন্তাশীল লেখকও বটে।

৮ সেপ্টেম্বর বুধবার তাঁর ফেইসবুক পেইজে নিন্মোক্ত লেখাটি সেয়ার করেন-

 

শীতের মৌসুমে ওয়াজ

শীতের মৌসুমে এবার মাহফিল কতটুকু হবে এবং কিভাবে হবে তা আন্দাজ করা মুশকিল হলেও বুঝা যায় কমবেশি মাহফিল হবে।

এটা শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণে নয় বরং কালচারালি কারণেই হয়ে থাকে।

 

আলেমদের চলমান সংকট

এবার বক্তার সংকট হবে বুঝা যাচ্ছে। মাওলানা মামুনুল হক,খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবি, মুফতি আমীর হামজা, মুফতি জুনায়েদ আল হাবীব, মুফতি হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী সহ অনেকেই কারাগারে আছেন। আল্লাহ তাদেরকে মুক্তির ব্যবস্থা করুন। মিজানুর রহমান আজহারী মালয়েশিয়ায় আছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে বয়ানের মাঠে শুন্যতা বিরাজ করবে।

বাধ্য হয়ে নতুন বক্তাদের খুজবে মানুষ। নতুনরা যদি একে অপরের বিরুদ্ধে খিস্তিখেউড় এবং ভুলভাল কথা এড়িয়ে রেফারেন্স যৌক্তিক বক্তব্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেন তাহলে ইতিবাচক ফলাফল আসতে বাধ্য।

 

ওয়াজ মাহফিলে নতুন আলেমদের যে সকল বিষয় মনে রাখা দরকার

বয়ানের সাবজেক্ট কি হওয়া উচিত, অজপাড়াগাঁয়ে গিয়ে সেখানকার মানুষের জন্য কোন টপিক জরুরী তা আগে থেকেই নির্ধারণ করা জরুরি। তাওহিদ রেসালাত এবং আখেরাতের মত ঈমানের মৌলিক বিষয়ের পাশাপাশি নামাজ, রোজা, মা বাবা পরিবার পরিজনের হক, প্রতিবেশির হক, মুমীনের গুণাবলী ইত্যাদি আলোচনা করা যেতে পারে।

আমাদের আছে মারকাজুদ দাওয়াহ মত আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান। গবেষক তৈরির এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বয়ানের টপিক এবং সেই সাথে নুসুস রেফারেন্স সরবরাহ করা যায়। বক্তারা তা চাইতে পারেন। অথবা ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব উদ্যোগে তা তৈরি করে দিতে পারে।

এদেশের তরুণদেরকে আকৃষ্ট করার জন্য তাদের ভাষায় কথা বলার প্রাকটিস করতে হবে। রেফারেন্স যুক্তিভিত্তিক বক্তব্য হতে হবে। বিশুদ্ধ উচ্চারণের পাশাপাশি বডি ল্যাংগুয়েজ হতে হবে মার্জিত। উল্টাপাল্টা কথা বলে ভাইরাল হওয়ার ধান্ধা বাদ দিতে হবে।

ওয়াজ মাহফিলে আয়োজকদের করণিয়

একটা সুন্দর মৌসুম হচ্ছে বয়ানের মৌসুম। দুনিয়ার অন্য কোথাও এমন সিস্টেম আছে বলে জানা নেই। নিজেদের বোকামি খেয়ালখুশি মত আচরণের কারণে একে বিনষ্ট করা উচিত হবেনা।

গভীর রাত পর্যন্ত মাহফিল চালানো, রাস্তাঘাটে মাহফিলের কালেকশন এটাও বন্ধ করতে হবে। আয়োজকদের মধ্যে যেকোনো উপায়ে বেশি লোক উপস্থিত করার মানসিকতাও চেঞ্জ করতে হবে। মাহফিল হবে আমাদের স্পিরিচুয়াল ডেভলপমেন্টের একটি কার্যকর উদ্যোগ।

বছর অনেক নতুন বক্তার অভিষেক হবে আশাকরি। যদি তারা দায়ীর মেজাজে এগিয়ে আসেন আল্লাহ বরকত দান করবেন। আর জনগণকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য যদি চেষ্টা করেন হারিয়ে যাবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url