জান্নাতের কথা স্মরণ করুন
জান্নাতের স্বরণে ক্ষতিগুলো লাভে পরিণত করুন
দুনিয়াতে আপনি যদি
ক্ষুধার্ত, দুঃখিত, মুখাপেক্ষী,
দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও অসুস্থ হন, কিংবা
আপনার কোনো হক নষ্ট করা হয় অথবা আপনার উপর কোনো জুলুম করা হয়, তা
হলে আপনি চিরস্থায়ী জান্নাতের কথা স্মরণ করুন। যখন আপনি এমনটি করতে শুরু করবেন
এবং সে অনুযায়ী কাজ করবেন,
তখন ক্ষতিগুলো লাভে পরিণত হয়ে যাবে। মসিবতগুলো দানে
রূপান্তরিত হয়ে যাবে।
সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী কে ?
সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী তিনিই, যিনি আখেরাতের
জন্য কাজ করেন। কেননা,
আখেরাতই উৎকৃষ্ট ও চিরস্থায়ী। সৃষ্টিজীবের মধ্যে সবচেয়ে নির্বোধ
ও বোকা সে, যে দুনিয়াকে সুখ-শান্তি, আরাম-আয়েশ ও আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্র বানিয়ে
নিয়েছে। ফলে যখনই তারা কোনো মসিবতে পড়ে, তখন সীমাতিরিক্ত ঘাবড়ে যায়। অতিরিক্ত
অস্থির হয়ে পড়ে। কেননা,
তাদের দৃষ্টিতে শুধু এ পার্থিব জগতের তুচ্ছ জীবনই ভাসে।
তারা কেবল এ নশ্বর পৃথিবীর জন্যই কাজ
করে। এ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারে না। তারা একান্তভাবে কামনা করে যেন এখানে তাদের আরাম-আয়েশে
কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়; ভাটা না পড়ে। অথচ যদি তাদের অন্তর থেকে জং
দূর হয়ে যেত এবং চোখ থেকে মূর্খতার পর্দা সরে যেত, তা হলে তারা জান্নাত, জান্নাতের
অফুরন্ত নেয়ামত,
আলিশান অট্টালিকা ও চিরস্থায়ী জীবনের কথা ভাবত।
পবিত্র কুরআনে জান্নাতের যেসকল গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্যাবলি
বর্ণিত হয়েছে,
সেগুলো শুনত ও অনুধাবন করার চেষ্টা করত।
নিঃসন্দেহে জান্নাতের সেই নেয়ামতের জন্য কঠোর
ত্যাগ, পরিশ্রম ও মুজাহাদা প্রয়োজন।
জান্নাতের সূখ
আমরা কি ভেবে দেখেছি যে, জান্নাতবাসীগণ
কখনও অসুস্থ হবে না। পেরেশান হবে না। মৃত্যুবরণ করবে না। তাদের যৌবন কোনোদিন শেষ হবে
না। কাপড় কখনও পুরোনো হবে না।
জান্নাতের কক্ষগুলি এমন হবে যে, বাইরে
থেকে ভিতরে এবং ভিতর থেকে বাইরে দেখা যাবে। সেখানে এমনসব নেয়ামত থাকবে, যা কোনো
মানুষের চক্ষু দেখেনি,
কোনো কান শোনেনি, এমনকি কোনো অন্তর তার ধারণাও করতে
পারেনি।
আরোহী ব্যক্তি একশ' বছরেও
জান্নাতের একটি গাছের ছায়া অতিক্রম করতে পারবে না। জান্নাতের তাবুগুলি হবে ষাট মাইল
লম্বা। নদীগুলো থাকবে প্রবহমান। অট্টালিকাগুলো হবে আলিশান।
জান্নাতের ফলগুলো খুব কাছে ঝুলে থাকবে। ঝরনা
প্রবাহিত হতে থাকবে। স্থানে স্থানে পানপাত্র সাজানো থাকবে গদি, গালিচা
ও ফরাস
বিছানো থাকবে।
জান্নাতের আনন্দ পরিপূর্ণ। চারদিকে খোশবু। সবকিছু
সতেজ-সজীব। তার গুণাগুণ
বর্ণনাতীত।
আমাদের বিবেক-বুদ্ধির কী হল?
জান্নাতের সুখ সমৃদ্ধির কথা জানা সত্ত্বেও আমাদের বিবেক-বুদ্ধির কী হল?
কেন আমরা তা নিয়ে ভাবি না?
যেহেতু জান্নাতে প্রবেশ করা আমাদের সকলেরই কামনা তবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, পীড়িত ও অভাবীদের দুশ্চিন্তা
কেন? বরং তাদের সকলেরই এই ভেবে আনন্দিত হওয়া উচিত যে, শেষ পরিণতি
শুভ হবে।
আমাদের সকলেরই উচিত, দুনিয়ার
দুঃখ-কষ্টের প্রতি লক্ষ না করে নেক আমল করে যাওয়া। যাতে আল্লাহ তাআলার নেয়ামতরাজি
ও তার জান্নাতের হকদার হতে পারি।
سَلٰمٌ
عَلَيْكُم بِمَا صَبَرْتُمْ ۚ فَنِعْمَ عُقْبَى الدَّارِ
‘তোমরা যে ধৈর্য ধারণ করেছ, সে জন্য
তোমাদের উপর শান্তি;
কতই না উত্তম এই পরিণাম।' (সূরা রা'দ : ২৪)
ওয়াজটি খুব সুন্দর হয়েছে। মেগাবাইট কমতে হবে।