তাকদীরের উপর সন্তুষ্ট থাকুন

আপনার যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকুন

আপনি ধন-সম্পদ, চেহারা-সুরত, সন্তান-সন্ততি, দক্ষতা-যোগ্যতা যেমনই প্রাপ্ত হয়েছেন, তাতেই আপনার তুষ্ট থাকা উচিত।

কুরআনও আপনাকে তা-ই বলে। 

فَخُذْ مَآ ءَاتَيْتُكَ وَكُن مِّنَ الشّٰكِرِينَ

আমি তোমাকে যা দিয়েছি, তা গ্রহণ কর এবং কৃতজ্ঞ হও।' (সূরা আ'রাফ : ১৪৪)

পূর্বসুরীগণ তাদের স্বল্প সামর্থ সঠিক কাজে লাগিয়ে সাফল্য লাভ করেছেন

আমাদের পূর্বসুরী উলামায়ে কেরাম ও প্রাথমিক যুগের মানুষ দরিদ্র ও গরীব। ছিলেন। উঁচু ইমারত, গাড়ি-বাড়ি, গোলাম-বাদি কিছুই ছিল না তাদের। তা সত্ত্বেও তারা ছিলেন সুখী ও সমাজে প্রভাববিস্তারকারী। তারা তাদের নিজেদের ও সমগ্র মানবতার অসামান্য উপকার করেছেন। কারণ, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে কল্যাণের যতটুকু তাওফীক দিয়েছেন, তাকে তারা সঠিক পথে কাজে লাগিয়েছেন। ফলে তাদের আমল-আখলাক ও কাজকর্মে বরকত হয়েছে।

তাদের মোকাবিলায় এমনসব ধনবান ও ঐশ্বর্যশালীরা ছিল, যারা সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যাওয়ার কারণে তাদের ধন-সম্পদ তাদের কোনো কাজেই আসেনি। তারা দুর্ভাগ্য ও অস্থিরতার জীবন যাপন করেছে। আসবাব-উপকরণই যে সব কিছু নয়এ তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

আপনি এমন অনেক মানুষের দেখা পাবেন, যাদের অনেক বড় বড় ডিগ্রি আছে। কিন্তু নিজেদের মেধা, যোগ্যতা, ও দ্বীন-ধর্মের দিক থেকে তারা অখ্যাতই রয়ে গেছে। পক্ষান্তরে তাদের বিপরীতে এমনও বহু মানুষ আছেন, যাদের ইলম ও জ্ঞান সীমাবদ্ধ। কিন্তু সেটুকুকেই তারা উপকার ও কল্যাণের ঝরনা বানিয়ে দিয়েছেন।

সুখী হতে চাইলে আল্লাহর দানে সন্তুষ্ট থাকুন

আপনি যদি সুখী হতে চান, তা হলে আল্লাহ তাআলা আপনাকে রূপ-যৌবন, চেহারা-সুরত যেমনই দান করেছেন; যে বংশেই আপনি জন্মলাভ করেছেন, যে কণ্ঠই আপনাকে দেওয়া হয়েছে, তাতেই আপনি সন্তুষ্ট থাকুন। নিজের আয়-উন্নতির উপর তৃপ্ত থাকুন।

ইতিহাসের অখ্যাত থেকে খ্যাতিতে উঠে আসা কয়েকজন

ইতিহাস খুলে দেখুন, এমন বহু মানুষ অতিবাহিত হয়েছেন, যারা অল্পে তুষ্ট থেকেছেন এবং দুনিয়াজোড়া সুনাম-সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। আতা ইবনে আবী রবাহ রহ. তাঁর যামানার সবচেয়ে বড় আলেম ছিলেন। অথচ তিনি ছিলেন একজন আযাদকৃত গোলাম। তাঁর গায়ের রঙ কালো ও নাক চেপ্টা ছিল। অধিকন্তু তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্তও ছিলেন।

আহনাফ ইবনে কাইস ছিলেন আরবের সবচেয়ে ধৈর্যশীল ও সহনশীল ব্যক্তি। তিনি ছিলেন শীর্ণকায়, কুঁজো, দুর্বল ও নুজ। তাঁর এক পায়ের গোছা আরেক পায়ের তুলনায় খাটো ছিল।

আমাশ ছিলেন তাঁর যামানার সবচেয়ে বড় মুহাদ্দিস। তিনি ছিলেন একজন আযাদকৃত গোলাম। তার দৃষ্টিশক্তি ছিল ক্ষীণ। তিনি অতি দরিদ্র ও অসহায় ছিলেন। তাঁর পোশাক ছিল ছেঁড়া-ফাটা।

বরং এঁদের সকলকে ছাপিয়ে আম্বিয়ায়ে কেরামের জ্বলন্ত উদারহণ আমাদের সামনে রয়েছে। নবী-রসূলগণের অনেকেই বকরি চড়িয়েছেন। হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম লোহার কাজ করতেন। হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম কাঠের কাজ করতেন। হযরত ইদ্রীস আলাইহিস সালাম দর্জির কাজ করতেন। অথচ তাঁরা ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। মানবতার মুক্তির দূত। মনে রাখবেন, আপনার মূল্য ও মর্যাদা আপনার যোগ্যতা ও কর্মে।

আপনার সৌন্দর্য, ধন-সম্পদ কিংবা পরিবারে কোনো ঘাটতি দেখা দিলে সে জন্য আফসোস করবেন না। আল্লাহ যা দান করেছেন, তাতেই সন্তুষ্ট থাকুন।

نَحْنُ قَسَمْنَا بَيْنَهُم مَّعِيشَتَهُمْ فِى الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا

 “আমিই তাদের মাঝে তাদের জীবিকা বণ্টন করে দিয়েছি পার্থিব জীবনে।' (সূরা যুখরুফ : ৩২)


পোষ্টটি ভালো লাগলে স্যোসাল মিডিয়ায় সেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করে জানাবেন।


www.su-path.com বাংলা ভাষায় একটি ইসলামি ওয়েবসাইট। প্রতিদিন নতুন নতুন বিষয়ে পোষ্ট করা হয়। 


আমাদের পোষ্টগুলো প্রতিদিন পড়তে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সাথে ধাকুন। ধন্যবাদ ।

আমাদের ফেইসবুক পেইজ 👉 https://www.facebook.com/SatyeraAlo

 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url