দুঃসময়ের ফরিয়াদ কে শোনেন?

দুঃসময়ের ফরিয়াদ কে শোনেন?

কে সে জন, যার কাছে দুঃখীজন ফরিয়াদ করে, বিপদগ্রস্তরা সাহায্য কামনা করে, বিশ্বজগত যার দিকে ধাবিত হয়, যার কাছে সমস্ত সৃষ্টি আকুল আবেদন করে, মুখে যার যিকির থাকে, অন্তরে যিনি বাস করেন? তিনি আল্লাহ। একমাত্র আল্লাহ তাআলা।

আমাদের কর্তব্য হচ্ছে বিপদে-আপদে, সুসময়ে-দুঃসময়ে সব সময়ই তাঁকে স্মরণ করা। তার কাছেই অনুনয়-বিনয় করা। তাঁর কাছ থেকেই সাহায্য কামনা করা। তাঁর দরবারেই মাথা নত করা। তার কাছেই প্রার্থনা করা এবং তাঁরই হয়ে যাওয়া। তা হলেই তার সাহায্য নেমে আসবে। তাঁর দয়ার দুয়ার খুলে যাবে। তিনিই ডুবন্তকে রক্ষা করেন। বিপদগ্রস্তকে মুক্তিদান করেন। অত্যাচারিতকে সাহায্য করেন। পথভ্রষ্টকে হেদায়েত দান করেন। রোগীকে সুস্থতা দান করেন। দুর্দশাগ্রস্তদের ফরিয়াদ শোনেন। 

‘তারা যখন জলযানে আরোহণ করে, তখন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকেই আহ্বান করে।' 
[সূরা আনকাবুত : ৬৫]

হতাশ হবেন না। প্রিয় পাঠক! এখানে আমি সেসকল দোয়ার পুনরুল্লেখ করব না, যেগুলো দুশ্চিন্তা-পেরেশানী, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও অস্থিরতা বিদূরিত করার প্রার্থনা রয়েছে সেসব দোয়া আপনি হাদীসের কিতাবসমূহে পাবেন। [সেখান থেকেই সেগুলো শিখে নিবেন এবং ওগুলোর সাহায্যে] আল্লাহর সঙ্গে কথা বলবেন। 
তাই কাছে প্রার্থনা করবেন। মনে রাখবেন, যদি আপনি তাকে পেয়ে যান, তা হলে সহ কিছুই পেয়ে যাবেন। আর যদি তাকে হারান, তা হলে বুঝে নিবেন, আপনি আপনার সব কিছুই হারিয়েছেন। 

প্রভুর কাছে দোয়া করাও এক মহান ইবাদত, যা অনেক কষ্টে অর্জিত হয়। যে  বান্দা উত্তমরূপে দোয়া করতে জানে, সে কখনও পেরেশান হবে না। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে না। কেননা, একমাত্র আল্লাহ তাআলার রশি ছাড়া বাকি সব রশি ছিড়ে যাবে। তাঁর দরজা ছাড়া বাকি সব দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।

তিনি অতি নিকটে। সবকিছুই দেখেন, শোনেন। যখন কোনো বিপদগ্রস্ত তাঁকে আহ্বান করে, তখন তিনি খুব ভালোভাবেই শোনেন।

তিনি মহাপরাক্রমশালী। তিনি অমুখাপেক্ষী। যারা দুর্বল, অসহায় ও অক্ষম, তাদের জন্য আদেশ হচ্ছে তার কাছে প্রার্থনা করা

‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব।' 
[সূরা মু'মিন : ৬০] 

প্রিয় পাঠক! যখন আপনি কোনো বিপদের সম্মুখীন হবেন, কোনো সংকটের মুখোমুখী হবেন, তখন তার নাম স্মরণ করুন। তাকে ডাকুন। তার কাছেই সাহায্য কামনা করুন। তার মহিমা ও পবিত্রতা বর্ণনা করুন। সেজদায় গিয়ে তার কুদরতী পায়ে কপাল রাখুন। তা হলে আপনি প্রকৃত স্বাধীনতা তথা তার দাসত্ব অর্জন করতে পারবেন।

হাত প্রসারিত করুন, আঁচল বিছিয়ে দিন, মুখ খুলুন এবং বেশি বেশি তার  কাছে প্রার্থনা করুন। তাঁর দুয়ারে লেপ্টে থাকুন। 
তাঁর দয়া ও অনুগ্রহের অন্বেষী হোন। তাঁর নামের জপ করুন। তার প্রতি সু-ধারণা পোষণ করুন।। তাঁর প্রতি একনিষ্ঠ হোন। সব কিছু ছেড়ে তাঁকেই আঁকড়ে ধরুন। তবেই আপনি কৃতকার্য ও সফল হবেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url