তাকদীরে বিশ্বাস রাখুন

তাকদীরে বিশ্বাস রাখুন

পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোনো বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। [সূরা হাদীদ : ২২]

কলম শুকিয়ে গেছে। পাতা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। যা ঘটবে তা স্থির হয়ে গেছে । তাকদীর সম্পূর্ণরূপে লিখে ফেলা হয়েছে। 
আমাদের জীবনে তা-ই ঘটে এবং ঘটবে, যা আমাদের জন্য লিখে রাখা হয়েছে। আমাদের উপর যা কিছু আপতিত হয়, তা ফসকে যাওয়ার মতো নয়। আর যা থেকে আমরা বেঁচে যাই, তা আমাদের জন্য লিখিত নয়। এ বিশ্বাস যখন আপনার অন্তরে দৃঢ়ভাবে গেঁথে যাবে, তখন আপনার কষ্টগুলো উপঢৌকনে আর বালা-মসিবতগুলো পুরস্কারে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। 

আপনার জীবনে যা-ই ঘটুক, আপনি তাকে কল্যাণকর মনে করুন। আল্লাহ তাআলা যার জন্য যা কিছু ভালো মনে করেন, তাকে তা থেকে অংশ দান করেন। আপনার যে কষ্টই হোক, যে রোগেই আপনি আক্রান্ত হোন। আপনার কোনো আত্মীয় মারা যাক কিংবা আপনার কোনো আর্থিক ক্ষতি হোক, আপনি মনে করবেন, আল্লাহ তাআলা এমনটিই আমার তাকদীরে লিখে রেখেছিলেন। 

তাকদীরে লেখা বিধান কখনও খণ্ডন করা যায় না। এক্ষেত্রে একচ্ছত্র এখতিয়ার একমাত্র আল্লাহ তাআলার। তবে হাঁ, আপনি যদি ধৈর্য ধারণ করেন, তাকদীরের ফায়সালায় সন্তুষ্ট থাকেন, তা হলে প্রতিদান পাবেন। অস্বীকার করলে কুফরিতে লিপ্ত হবেন। অতএব, যারা বিপদগ্রস্ত তাদের জন্য সুসংবাদ। কারণ, সব কিছু আল্লাহ তাআলার হুকুমেই সম্পাদিত হচ্ছে; যিনি দিয়ে থাকেন এবং নিয়েও যান; যিনি দানও করেন আবার ছিনিয়েও নেন।

‘তিনি যা করেন সে সম্পর্কে তিনি জিজ্ঞাসিত হবেন না, তবে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে।' [সূরা আম্বিয়া : ২৩] ।

তাকদীর ও আল্লাহর ফায়সালার উপর যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্বাস স্থাপন করবেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার স্নায়ু প্রশান্তি লাভ করতে পারবে না। আপনার মানসিক উদ্বিগ্নতা দূর হবে না। অন্তরের দ্বন্দ্ব ও ওয়াসওয়াসা শেষ হবে না। 

যা হবার তা হবেই। অতএব, আক্ষেপ করে কী লাভ? আপনি এমনটা ভাববেন না যে, আপনি ধসোন্মুখ দেয়ালকে বাঁচাতে পারবেন; পানির প্রবাহ ও বাতাসের গতিপথ রোধ করতে পারবেন; কাঁচ ভাঙ্গা থেকে রক্ষা করতে পারবেন। এটা কখনোই সম্ভব নয়। আপনার-আমার ভালো লাগুক আর না-ই লাগুক, তাকদীরে যা লেখা আছে তা ঘটবেই। আল্লাহ। তাআলার ফায়সালা বাস্তবায়ন হবেই।

“অতএব, যার ইচ্ছা বিশ্বাস স্থাপন করুক আর যার ইচ্ছা অমান্য করুক।' [সূরা কাহফ : ২৯] 

অসন্তুষ্টি, অভিযোগ ও চিৎকার-চেঁচামেচির পরিবর্তে ঐশী ফায়সালার সামনে মাথা নত করে দিন। দেখবেন, আপনি লজ্জিত হবেন না। আপনি যতই উপায়-উপকরণ গ্রহণ করুন, যতই চেষ্টা-তদবির করুন, অবশেষে দেখবেন, তা ঘটবেই যার আশঙ্কা করছিলেন। 

অতএব বলুন‘তাকদীরে এমনটিই ছিল। আল্লাহ যা চান তা-ই করেন। এরূপ বলবেন না ‘আহ্! যদি আমি তেমনটি করতাম, তা হলে এমন হত না।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url