যা চলে গেছে তা চিরদিনের জন্য চলে গেছে
যা চলে গেছে তা চিরদিনের জন্য চলে গেছে
ড. আয়েয আল ক্বরনী
অতীত নিয়ে বসে থাকা, অতীতের দুঃখ-বেদনা ও দুর্ঘটনাকে স্মরণ করতে থাকা এবং সেজন্য আক্ষেপ-অনুশোচনা করা নির্বুদ্ধিতা ও পাগলামি। এর ফলে আপনার সংকল্পে দুর্বলতা সৃষ্টি হবে; বর্তমান জীবন সংকীর্ণ হয়ে পড়বে।
জ্ঞানীগণ বলেন, অতীতের ডায়েরি গুটিয়ে রেখে দিন। তা আর কোনোদিন খুলে দেখবেন না। বরং তা চিরদিনের জন্য ভুলে যান। কেননা, যা চলে গেছে তা চিরদিনের জন্য চলে গেছে। আপনি স্মরণ করলেই সে আর ফিরে আসবে না।
আপনার কোনো দুশ্চিন্তা বা পেরেশানীই তাকে আর পুনরায় ফিরিয়ে আনতে পারবে না। কারণ, অতীত মানে বিলীন; অতীত মানেই অস্তিত্বহীন। অতীত নিয়ে বিভোর থাকার রোগে আক্রান্ত হবেন না।
যা হারিয়েছেন তার পিছনে পড়বেন না। কেননা, আপনি সমুদ্রকে উৎসের দিকে, সূর্যকে উদয়াচলের দিকে, শিশুকে মায়ের গর্ভে, দুধকে স্তনে ও অশ্রুকে পুনরায় চোখে ফিরিয়ে দিতে পারবেন না।
অতীতের ছায়ায় বসবাস করা, সর্বদা অতীতকে স্মরণ করা, অতীতের আগুনে জ্বলতে থাকা অত্যন্ত দুঃখজনক কথা।
অতীত নিয়ে অতিরিক্ত ভাবা বর্তমানকে ধ্বংস করার নামান্তর; সময় অপচয় করার সমার্থক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে অতীতের বিভিন্ন সম্প্রদায় ও তাদের কার্যকলাপের বর্ণনা দিয়ে বলেছেন
تِلْكَ أُمَّةٌ قَدْ خَلَتْ
‘তারা ছিল এক সম্প্রদায়, যারা গত হয়ে গেছে।' [সূরা বাকারা : ১৩৪]
অর্থাৎ ওসব সম্প্রদায়ের ব্যাপার চুকে গেছে।
অতীতের বিষয় নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে এবং অতীতের পাতা উল্টিয়ে কী লাভ! অতীত নিয়ে বিভোর থাকা ব্যক্তির উপমা ওই ব্যক্তির ন্যায়, যে পেষাইকৃত আটাকে বার বার পিষতে থাকে কিংবা চেরা লাকড়িকে আবার চিরতে থাকে।
যারা অতীত নিয়ে হা-হুতাশ ও কান্নাকাটি করে, তাদের ব্যাপারে পূর্ববর্তীগণ বলেছেন, “তোমরা মৃতদেরকে কবর থেকে বের করে এনোনা। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা বর্তমানের ব্যাপারে অক্ষম-অপারগ; অতীতের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত।
আমরা বর্তমানের সুরম্য অট্টালিকা ফেলে রেখে অতীতের ধ্বংসপ্রাপ্ত কেল্লার জন্য বিলাপ করি। অথচ মানবজাতি ও জিনজাতি সকলে মিলে একত্র হলেও অতীতকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে না।
মানুষ পিছনে দেখে না। বাতাস সামনে বয়। পানি সম্মুখ পানে প্রবাহিত হয়। কাফেলা এগিয়ে চলে- এইতো জীবনের ধারা। তবে আপনি কেন এর বিপরীত করবেন?
ইউটিউবে দেখুন :
ইউটিউবে দেখুন :