বাদশাহীর মূল্য | শিক্ষামূলক ঘটনা
বাদশাহীর মূল্য
হযরত নিযামুদ্দীন আওলিয়া (র:) এর সঙ্গে সুলতান গিয়াসুদ্দিন বুলবন শত্রুতা ভাব পোষন করতেন। কারণ হযরতের জনপ্রিয়তার দরুণ তার এই ধারণা জন্মেছিল যে তিনি তার বাদশাহী দখল করে নিবেন। অতঃপর একদিন সুলতান অসুস্থ হয়ে পড়লেন। পেশাব বন্ধ হয়ে গেল। শাহী দরবারে জ্ঞানী-গুনী সকলে মিলে যতরকম তদবীর এবং চিকিৎসা ছিল সবই করলেন। কিন্তু পেশাব আসলো না। প্রাণ বাহির হওয়ার উপক্রম হলো। সুলতানের মা দ্রুত হযরতের খেদমতে ছুটে গেলেন। ভক্তি ও শ্রদ্ধায় বিগলিত হয়ে ক্ষমা চাইলেন। এবং নিজের পুত্রের জন্যে দোয়ার আবেদন করলেন।
হযরত বললেন, “আমি তখনই শুধু তার জন্যে দোয়া করবো যখন সে তার সমস্ত বাদশাহী আমার নামে লিখে দিবে এবং তার উপর দরবারের সকল পরিষদের দস্তখত থাকবে।”
সুলতান অসুস্থতার দরুণ বড় অসহায় হয়ে পড়েছিলেন এবং তার পেট ফুলে ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অতঃপর সুলতানের মা বাদশাহী লিখে দেওয়া কাগজ-পত্র নিয়ে হযরতের খেদমতে পেশ করলেন। হযরত নিযামুদ্দীন (রঃ) সেইটা টুকরা টুকরা করে একটি পাত্রে রেখে বললেন, “এই পাত্রে তাকে পেশাব করতে বল, পেশাব এসে যাবে।”
সুলতানের মা তাই করলেন। পেশাব এসে গেল। সুলতান নিষ্কৃতি পেলেন।
তিনি এই আমলের দ্বারা এটাই প্রমানিত করলেন। যে তার দৃষ্টিতে সুলতান গিয়াসুদ্দিন বুলবনের বাদশাহীর মূল্য পেশাবের ধারার চেয়ে অধিক মূল্যবান নয়।
তাঁর এরূপ অমূল্য দূর-দৃষ্টির প্রভাবে অসংখ্য অমুসলিম ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছে।