বিশিষ্ট সাহাবী হযরত মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) । সাহাবা চরিত
হযরত মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.)
মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) একজন সশস্ত্র বীরযোদ্ধা, যিনি মল্লযুদ্ধে একশত মুশরিককে হত্যা করেছেন। সুতারাং রণসমুদ্রে তিনি যাদের হত্যা করেছেন তাদের সংখ্যার ব্যাপারে তোমার কী ধারণা হতে পারে!!
–ঐতিহাসিকগণ
ঐ তো আল্লাহর সৈনিক বীর মুজাহিদরা আল্লাহর দেয়া সাহায্যে আনন্দিত উৎফুল্ল হয়ে কাদেসিয়ার রণাঙ্গনের ধুলিবালি শরীর থেকে ঝেড়ে ফেলছেন।
শহীদ ভাইদের জন্য যে পুরস্কার লিখিত হয়েছে তাতে তারা ঈর্ষান্বিত।
কাদেসিয়ার ন্যায় ভয়াবহ গুরুত্বপূর্ণ রণাঙ্গনের তারা প্রত্যাশী।
কিসরার সিংহাসনের উৎপাটন করার জন্য ক্রমাগত জিহাদ চালিয়ে যাবার লক্ষ্যে খলীফা হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (রাযি.) এর নির্দেশাগমনের অপেক্ষায় অপেক্ষমাণ।
****
মুজাহিদদের আগ্রহ আর উদ্দীপনার কাল বেশি দীর্ঘ হলো না।
ঐ তো হযরত ওমর ফারুক (রাযি.) এর দূত মদিনা থেকে কুফায় আগমন করেছে। সাথে রয়েছে কুফার গভর্নর আবু মুসা আশআরী কে দেয়া নির্দেশ । যেন তার বাহিনী নিয়ে এগিয়ে যান এবং বসরা থেকে আগত মুসলিম বাহিনীর সাথে মিলিত হন। তারপর একসাথে আহওয়াজে যান। হরমুজানকে ধাওয়া করে শেষ করতে হবে। পারস্যের মুক্তা আর কিসরার মুকুটের মতি “তুসতার” শহরকে মুক্ত করতে হবে। খলীফাতুল মুসলিমীন আবু মুসা আশ’আরী (রাযি.)কে যে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন তাতে রয়েছে তিনি যেন বনু বকর গোত্রের সর্দার, তাদের অবিসংবাদিত নেতা বীর অশ্বারোহী যোদ্ধা মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) কে তার সাথে নিয়ে নে নেন।
******
আবু মূসা আশ‘আরী খলিফাতুল মুসলিমীনের নির্দেশের কথা প্রচার করলেন। তার বাহিনীকে প্রস্তুত করলেন। বামপাশের বাহিনীর নেতৃত্ব দিলেন মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.)। তারপর তিনি বসরা থেকে আগত মুসলিম বাহিনীর সাথে মিলিত হলেন এবং একই সাথে আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলেন। তারা একের পর এক শহর জয় করতে লাগলেন এবং সেনাবাহিনীর দুর্গ গুলো পবিত্র করতে লাগলেন। আর হরমুজান এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পালিয়ে যেতে লাগল। অবশেষে তুসতার শহরে গিয়ে পৌঁছলো এবং তার দুর্গম দুর্গে আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করল।
****
হরমুজান যেহেতু তুসতার শহরে আশ্রয় নিয়েছে, তা ছিল পারস্যের সবচেয়ে মনোরম শহর। নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ছিল বিস্ময়কর। অত্যন্ত মজবুত ও অলঙ্ঘনীয়।
তাছাড়া তা অত্যন্ত প্রাচীন প্রাচীন শহর। ইতিহাসের পাতায় পাতায় তার উপমা বিদ্যমান। ঘোড়ার ন্যায় সুউচ্চ ভূমিতে তা প্রতিষ্ঠিত। দুজাইল নামক এক বিরাট নদী তার পিপাসা নিবারণ করে।
তার উপর রয়েছে বিরাট ফোয়ারা। বাদশা শাবূর তা নির্মাণ করেছে। ভূগর্ভস্থিত সুরঙ্গ পথ দ্বারা তাতে নদীর পানি তোলা হয়। তুসতার শহরের ফোয়ারা ও তার সুরঙ্গ পথ এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। কঠিন মজবুত পাথর আর লোহার স্তরের মাধ্যমে তা তৈরি করা হয়েছে। আর সীসা দ্বারা তার সুরঙ্গ পথ গুলোকে ঢালাই করা হয়েছে। তুসতার নগরীর চারপাশ ঘিরে আছে সুউচ্চ মজবুত নগরপ্রাচীর, যেমন বাহুকে কংকন ঘিরে রাখে।
ঐতিহাসিকগন বলেন, তা হল সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ নগর প্রাচীর যা পৃথিবীকে তৈরি করা হয়েছে। তারপর হরমুজান নগর প্রাচীরের চারপাশে বিরাট পরিখা খনন করল। যা অতিক্রম করা অসম্ভব এবং তাতে পারসিকদের দুধর্ষ যুদ্ধাদের সমাবেশ করল।
মুসলিম মুজাহিদ বাহিনী তুসতার নগরীর পরিখার পাশে সৈন্য সমাবেশ ঘটাল। আঠারমাস কেটে গেল কিন্তু পরীক্ষা অতিক্রম করতে পারল না।
সে দীর্ঘ সময়ে পারসিকদের বাহিনীর সাথে আশিবার যুদ্ধ হল।
সবগুলো যুদ্ধ অশ্বারোহীদের মল্লযুদ্ধের মাধ্যমে শুরু হত। তারপর অত্যন্ত ভয়াবহ ও ভয়ংকর যুদ্ধের রূপ ধারণ করত। এ মল্লযুদ্ধ গুলোতে মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) এমন নৈপুণ্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, যা শত্রু-মিত্র নির্বিশেষে সবাইকে বিস্মিত ও হতবুদ্ধি করেছে। মল্লযুদ্ধে তিনি শত্রুপক্ষের একশত আরোহী যোদ্ধাকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে তার নামই পারসিকদের সারিতে ত্রাস সৃষ্টি করত। আর মুসলমানদের অন্তরে ইজ্জত ও আত্মমর্যাদা সৃষ্টি করত।
ইতিপূর্বে যারা তাকে চিনতো না তারা বুঝতে পারলো কেন আমিরুল মোমেনীন হযরত ওমর ফারুক (রাযি.) এই বীর যোদ্ধাকে মুজাহিদ বাহিনীর মাঝে নিতে আগ্রহী হয়েছিলেন।
*******
সেই আশিটি যুদ্ধের সর্বশেষ যুদ্ধে মুসলমানগণ শত্রু বাহিনীর উপর এমন বীরত্বপূর্ণ দুর্বার আক্রমন করলেন যে, পারিসকরা পরিখার উপরে স্থাপিত সেতুগুলো বন্ধ করে দিল।
*****
এ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মুসলমানগন খারাপ খারাপ অবস্থাকে পশ্চাতে ফেলে আরও ভীষণ খারাপ অবস্থার মুখোমুখি হল। পারসিকরা উঁচু উঁচু বুরুজ থেকে অব্যর্থ তীর নিক্ষেপ করতে লাগল। নগর প্রাচীরের উপর থেকে লোহার শিকল ফেলতে লাগল যেগুলোর নিচের দিকে আগুনে দগদগে জ্বলা আংটা স্থাপিত। মুসলিম বাহিনীর কেউ কেউ প্রাচীরে উঠতে চাইলে বা তার নিকটবর্তী হলে সেই আংটা তার গায়ে বিধাতো এবং টেনে তুলে নিয়ে যেত। ফলে তার শরীর পুড়ে যেত গোশত খসে খসে পড়ত এবং মৃত্যুবরণ করত।
**********
বিপদের ঘনঘটা তীব্র আকার ধারণ করল। মুসলিম মুজাহিদগন বিনয় বিগলিত হৃদয়ে আল্লাহর নিকট দোয়া করতে লাগলেন। যেন আল্লাহ তায়ালা তাদের বিপদ দূর করে দেন। শত্রুর বিরুদ্ধে তাদের সাহায্য করেন।
*****
হযরত আবু মুসা আশ’আরী (রাযি.) যখন তুসতারের বিশাল নগর প্রাচীর নিয়ে চিন্তায় মগ্ন, তাকে পদানত করতে আশাহীনতায় নিমগ্ন, তখন তাঁর সামনে এসে একটি তীর পড়ল। যা নগরীর নগর প্রাচীরের উপর থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি দেখলেন তাতে একটি চিঠি বাধা। তাতে লিপিবদ্ধ রয়েছে-
‘হে মুসলমান সম্প্রদায়! আমি তোমাদের বিশ্বাস করি তাই আমি তোমাদের নিকট আমার আমার ধন সম্পদের পরিবার-পরিজন ও অনুসারীদের নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি । আমার প্রার্থনা কবুল করলে আমি তোমাদের এমন এক সুড়ঙ্গ পথ দেখিয়ে দেব যা দ্বারা তোমরা শহরে প্রবেশ করতে পারবে।’
হযরত আবু মুসা আশ’আরী (রাযি.) তখন তীর নিক্ষেপকারীর জন্য নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পত্র লিখলেন এবং তীরের মাধ্যমে তা নিক্ষেপ করলেন। প্রতিশ্রুতি পূরণে মুসলমানগন প্রসিদ্ধি লাভের কারণে তাকে দেয়া প্রতিশ্রুতি পত্রে সে নিশ্চিন্ত হল এবং রাতের অন্ধকার চিরে সন্তর্পনে তাদের নিকট এল। তারপর হযরত আবু মুসা আশ’আরী (রাযি.) এর নিকট তার প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরে বলল-
‘আমরা নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। হরমুযান আমার সবচেয়ে কাছের বড় ভাইকে হত্যা করেছে। তার ধন-সম্পদ ও পরিবার পরিজনের উপর সীমালংঘন করেছে। আর আমার ব্যাপারেও তার হৃদয়ে রয়েছে অশুভ চিন্তা। তাই আমি আমার ও আমার সন্তানদের নিরাপত্তা চেয়েছি আমি তার জুলুমের উপর আপনাদের নিরাপত্তা কে প্রাধান্য দিয়েছি তার বিশ্বাসঘাতকতার উপর আপনাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ কে প্রাধান্য দিয়েছি । আর এ ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আমি আপনাদের এমন এক গোপন সুরঙ্গ পথ দেখিয়ে দিব যা দ্বারা আপনারা তুসতার শহরে প্রবেশ করবেন।
তাই আমাকে একজন দুঃসাহসী বুদ্ধিমান ব্যক্তি দিন আর তাকে অবশ্যই সাঁতারে পারদর্শী হতে হবে। আমি তাকে পথ দেখিয়ে দেব।’
********
হযরত আবু মূসা আশ’আরী (রাযি.) মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) ডেকে পাঠালেন গোপন বিষয়টি তাকে জানিয়ে বললেন তোমার গোত্রের এমন একজন লোক দিয়ে আমাকে সাহায্য কর যার বুদ্ধি আছে, দৃঢ়তা আছে, আর সে সাঁতারে সক্ষম।
তখন মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) বললেন হে আমীর! সেই ব্যক্তিটি আমাকে নির্বাচিত করুন। তখন হযরত আবু মুসা আশ’আরী (রায.) বললেন,যদি তুমি সে ব্যক্তি হতে চাও তাহলে আমরা নিশ্চিন্ত। তারপর হযরত আবু মুসা আশ’আরী (রাযি.) তাকে পথটি ভালোভাবে চিনে নিতে, ফটকের স্থানটি জেনে নিতে, হরমুজানের অবস্থান ক্ষেত্রটি জেনে নিতে তার ব্যক্তিত্বকে চিহ্নিত করতে উপদেশ দিলেন। এছাড়া অন্য কিছু না করারও উপদেশ দিলেন।
রাতের অন্ধকারে মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) তার পারসিক পথপ্রদর্শক ব্যক্তিটির সাথে যাত্রা শুরু করলেন পথ প্রদর্শক ব্যক্তিটি তাকে ভূগর্ভস্থ একটি সুরঙ্গ পথে প্রবেশ করিয়ে দিল যা নদী থেকে শহরে গিয়ে মিশেছে। সুরঙ্গ পথটি কখনো বেশ প্রশস্ত হত ফলে তাতে ডুব দেয়া সম্ভব হত আবার কখনো বেশ সংকীর্ণ হতো ফলে সোজা সাঁতরে যেতে হত। কখনো আঁকাবাঁকা হতো আবার কখনো সোজা সরল হত। এভাবে চলতে চলতে সুরঙ্গ পথটি অবশেষে তাকে শহরে নিয়ে গেল লোকটি তাকে তার ভাইয়ের হত্যাকারী হরমুজান কে দেখালো এবং যে স্থানে সে নিরাপদ থাকে তাও দেখাল। হরমুজানকে দেখে তার কন্ঠে তির মেরে ফেলে দিতে চাইল। কিন্তু সাথে সাথে তার হযরত আবু মূসা আশ’আরী (রাযি.) এর উপদেশের কথা মনে হল যে, অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটাবে না। তাই তিনি তার মনের ইচ্ছেকে মনের মাঝেই রহিত করলেন এবং সূর্যোদয়ের আগেই আগমনের পথ দিয়ে প্রত্যাগমন করলেন।
********
হযরত আবু মূসা আশ‘আরী (রাযি.) বীর হৃদয় তিনশত মুজাহিদ প্রস্তুত করলেন। যারা ধৈর্য ও সহনশীলতায় প্রচন্ড। সাঁতারে পারদর্শী। মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.)কে তাদের সেনাপতি বানিয়ে দিলেন। তাদের বিদায় জানালেন ও উপদেশ দিলেন । আর আল্লাহু আকবার ধ্বনি কে শহর আক্রমণের জন্য মুজাহিদ বাহিনীকে আহ্বানের সংকেতিক আওয়াজ নির্ধারণ করলেন।
মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.)তার অধীনস্থ মুজাহিদদের নির্দেশ দিলেন তারা যেন যথাসম্ভব হালকা কাপড় পরিধান করে। যেন পানি তাদের ভারাক্রান্ত করতে না পারে। তাদের সতর্ক করে দিলেন তারা যেন তাদের সাথে তলোয়ার ছাড়া অন্য কিছু না নেয়। আর তলোয়ারকে কাপড়ের নিচে শরীরের সাথে বেঁধে নেয়। তারপর তাদের নিয়ে রাতের প্রথম প্রহর শেষে যাত্রা করলেন।
****
মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) ও তার বীর বাহিনী প্রায় দুই ঘণ্টা ভয়াবহ দুর্গম এই সুরঙ্গ পথের সাথে মোকাবেলা করে চলতে লাগল।
অবশেষে শহরে পৌঁছার মুখে গিয়ে মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) দেখলেন সুরঙ্গপথে ২২০ জন বীর যোদ্ধা হারিয়ে গেছে। মাত্র ৮০ জন বাকি আছে।
******
শহরের মাটিতে পৌঁছেই মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) ও তাঁর সাথীগণ তরবারী উম্মোচিত করলেন এবং দুধের উপর দূর্গ প্রহরীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন। তরবারী গুলো তাদের বুকে প্রবিষ্ট করে দিলেন। তারপর ফটকের দিকে ছুটে গেলেন। তাকবীর দিতে দিতে তা খুলে দিলেন। ভিতরের মুজাহিদদের তাকবীর ধ্বনি আর বাইরের মুজাহিদদের তাকবীর ধ্বনির সাথে মিলিত হল । প্রত্যুষেই মুজাহিদগণ দলে দলে শহরে উপচে পড়লেন ।
মুজাহিদদের মাঝে ও আল্লাহর শত্রুদের মাঝে অত্যন্ত ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের চাকা ঘুরতে লাগল। ইতিহাসে ধরনের ভয়াবহ ভীতিপ্রদ নিহতে প্রাচুর্যময় যুদ্ধ কমই দেখেছে।
*******
যুদ্ধ যখন পূর্ণমাত্রায় চলছে ঠিক তখন মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) হরমুজানকে রণক্ষেত্রে দেখতে পেলেন। তিনি তার দিকে ছুটে গেলেন তরবারী দ্বারা আক্রমণ করে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। কিন্তু যোদ্ধাদের তরঙ্গে তিনি হারিয়ে গেলেন। তারপর আবার তাকে দেখতে পেয়ে তার দিকে ছুটে গেলেন এবং আক্রমণ করলেন মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) ও হরমুজান একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। প্রত্যেকেই তরবারির চূড়ান্ত আঘাত করল। মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) এর তরবারী ফিরে এলো। হরমুজানের তরবারির আঘাতে সক্ষম হল। ফলে সশস্ত্র বীর যোদ্ধা রনাঙ্গনে লুটিয়ে
পড়লেন। তবে তাঁর হাতে আল্লাহ্ আ‘আলা যে বিজয় দান করেছেন তাতে তার চক্ষু শীতল, পরিতৃপ্ত। মুজাহিদ বাহিনী ক্রমাগত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে লাগল। অবশেষে আল্লাহ তায়ালা তাদের বিজয় দান করলেন এবং হরমুজান মুজাহিদদের হাতে বন্দী হল।
****
খলিফা হযরত উমর ফারুক (রাযি.) এর নিকট বিজয়ের সুসংবাদ দেয়ার জন্য সুসংবাদবাহী প্রতিনিধিদল ছুটে চলল।
তারা তাদের সামনে টেনে নিয়ে চলছে হরমুজানকে । তার মাথায় মনি মুক্তা খচিত মুকুট । তার কাঁধে স্বর্ণের সুসজ্জিত জোড়া পোশাক। যেন খলীফা তাকে দেখেন।
তার সাথে প্রতিনিধিদল খলীফার নিকট বয়ে আনছে বীর আশ্বারোহী যোদ্ধা মাজযাআহ্ ইবনে সাউর (রাযি.) এর শাহাদাতের শোকবার্তা।