মহানবী (সা.)এর প্রথম বাক্য । ফেশেতা দ্বারা কলব পরিস্কার । গনকের ভবিষ্যৎবানী
মহানবী (সা.)এর প্রথম বাক্য
হযরত হালিমা বর্ণনা করেন যে, “যে সময় আমি মহানবী সাল্লাল্লাহু ইসলাম এর দুধ ছাড়ালাম তখন তার জবান মোবারক এর মধ্যে এ কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়েছিলঃ
এবং এটিই ছিল তার প্রথম বাক্য। (বাইহাকী ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেন)
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শারীরিক গঠন প্রণালী অন্য সব বাচ্চাদের থেকে উন্নত ছিল। দুই বছর বয়সেই তাকে অনেক বড় দেখা যাচ্ছিল। এখন আমরা নিয়মানুযায়ী তাকে তার মায়ের নিকট নিয়ে গেলাম। কিন্তু তার বারাকাত সমূহের কারণে তাকে ছেড়ে আসতে মন চায় নি ।
ঘটনাক্রমে সে বছর মক্কায় প্লেগ বা কলেরার প্রভাব ছিল। আমরা মহামারীর বাহানা করে তাকে পুনরায় সাথে নিয়ে এলাম আমাদের কাছেই। তিনি ঘরের বাইরে যেতেন এবং ছোট ছেলেদের কে খেলাধুলা করতে দেখতেন, কিন্তু নিজে খেলাধুলা থেকে আলাদা থাকতেন। তিনি আমাকে বললেন যে, আমার অন্য ভাইকে দেখতে পাইনি সে কোথায় থাকে? আমি বললাম সে বকরি চরাতে যায় । মহানবী (সা.) বললেন আমাকেও তার সাথে পাঠাবেন। এরপর তিনি তার দুধ ভাই আব্দুল্লাহ সাথে বকরি চরাতে যেতেন ।(খাসায়েস ১ম খন্ড, পৃ. ৫৫)
ফেশেতা দ্বারা কলব পরিস্কার
একবার তারা উভয়ে পশুদের মাঝে ফিরে বেড়াচ্ছিলেন।এমতাবস্থায় আব্দুল্লাহ হাঁপাতে হাঁপাতে এসে ঘরে পৌঁছলো, এবং তার পিতাকে বলল আমার কোরাইশ ভাইকে দুজন সাদা কাপড় পরিহিত লোক এসে তাঁকে শুইয়ে পেট চিরে ফেলেছে । আমরা স্বামী-স্ত্রী উভয় ভয় পেয়ে চারণভূমি দিকে ছুটে গেলাম। গিয়ে দেখতে পেলাম বসে আছেন এবং তার চেহারার রং বদলে গেছে । আমি জিজ্ঞেস করলাম, ছেলে তোমার কি হয়েছে? তিনি বললেন, দুজন সাদা কাপড় পরিহিত লোক এসে আমাকে ধরে শুইয়ে দিলো এবং আমার পেট চিরে তার মধ্যে কিছু সন্ধান করে বের করল । আমি জানি না তাতে কি ছিল ।
গনকের ভবিষ্যৎবানী
এরপর আমরা মহানবী (সা.) কে এক গনকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। গনক তাঁকে দেখেই আশ্চর্য়ের অতিশয্যে নিজ যায়গা থেকে উঠে গেল।এবং তাকে আপন বুকে উঠিয়ে নিল আর চিৎকার করে বরতে লাগল- “হে আরব বাসীগন শীঘ্র কর। যে বিপদ সত্বর তোমাদের উপর পৌছার কথা ছিল, তা প্রতিহত কর।যার পন্থা হল এই যে, তোমরা এ ছেলেটিকে হত্যা কর এবং আমাকেও তাঁর সাথে হত্যা করে ফেল।যদি তোমরা তাকে হত্যা না করে ছেড়ে দাও, তাহলে মনে রেখো, সে তামাদের ধর্মকে মিটিয়ে দেবে এবং এমন এক ধর্মের প্রতি তোমাদের দাওয়াত দেবে, যার কথা তোমরা শোন নি ।”
হালিমা গণকের কথা শুনে শিউরে উঠলেন এবং তাকে এই হতভাগার হাত থেকে টেনে নিয়ে বললেন যে, তুমি পাগল হয়ে গেছো তোমার দেমাগ চিকিৎসা করা দরকার ।
হালিমা তাকে নিয়ে ঘরে ফিরে এলেন কিন্তু এই দ্বিতীয় ঘটনাটি মহানবী (সা.) কে তার সম্মানিতা মাতার নিকট ফিরিয়ে দিতে বাধ্য করল। কেননা তিনি তার যথাযোগ্য হেফাজত করতে পারছিলেন না।(আল্লামা জামী (র.) কতৃক লিখিত শাওয়াহেদুন নবুওয়ত ও খাসায়েসে কুবরা দ্রঃ)
মক্কায় পৌঁছে মহানবী (সা.) কে যখন তার সম্মানিতা মাতার নিকট অর্পণ করলেন, তখন হালিমাকে তিনি বললেন আগ্রহভরে নিয়ে গেলে এত তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনার কারণ কি? অত্যধিক পীড়াপিড়ির পর বিবি হালিমার সমস্ত ঘটনা খুলে বলতে হল। তিনি সব কথা শুনে বললেন, “নিশ্চয়ই আমার ছেলের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে।” অতপর তিনি গর্ভাবস্থা ও ভূমিষ্ঠ কালের আশ্চর্যজনক ঘটনাবলী শুনালেন।
উৎস : সীরাতে খাতামুল আম্বিয়া (মূল উর্দূ) সংকলন ও সম্পাদনা ইসলামঅলসো.কম