"হিংসা" রোগের ঔষধ নেই | শেখ সাদীর লেখা গল্প
"হিংসা" রোগের ঔষধ নেই | শেখ সাদীর লেখা গল্প
সম্পাদনা : আবদুর রহীম
তুরস্কের বাদশাহ আগলামাশের প্রসাদে এক সৈনিক পুত্রকে দেখলাম তাঁর জ্ঞান, প্রতিভা, বুদ্ধি ও বিচক্ষণতা বর্ণনাতীত। বাল্যকাল থেকে তাঁর চেহারায় মহত্বের সমূহ লক্ষণ স্পষ্ট ছিল। বিচক্ষণতার আলোকচ্ছটা তার চাল চলনে ছিল প্রষ্ফুটিত।পংক্তি :
ললাটে তার স্পষ্ট ছাপ বুদ্ধিমত্তার
সৌভাগ্য তারকার জ্বলছে আলো খুবই চমৎকার
বাদশাহ তাকে রাজকীয় পদে নিযুক্ত করলেন। কেননা তার মধ্যে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় সৌন্দর্যের সমাবেশ ছিল।
জ্ঞানীগণ বলেন-
“ধনাট্যতার সম্পর্ক হৃদয়ের সাথে সম্পদের সাথে নয়।
উৎকর্ষতার সম্পর্ক জ্ঞানের সাথে বয়সের সাথে নয়।”
তার সঙ্গীদের মধ্যে কেউ কেউ তার পদোন্নতির কারণে শত্রুতা করতে লাগলো। তার বিরুদ্ধে খেয়ানতের মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করল এবং তাকে হত্যা করার ব্যর্থ চেষ্টা করতে লাগলো।
পংক্তি
বন্ধু যদি হয় করুণাময় -
শত্রুতে তার কি হবে লয়?
বাদশা বা লোকটিকে জিজ্ঞেস করলেন- তোমার বিরুদ্ধে এদের শত্রুতার কারণ কি?
সে বলল- জাহাপনার অনুগ্রহের ছায়ায় থেকে সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছি। কিন্তু হিংসুকদের সন্তুষ্ট করতে পারিনি। তরা কেবল আমার প্রাপ্ত নেয়ামত ধ্বংশ হলেই সন্তুষ্ট হবে।
জাহাপনার সম্রাজ্য বিরস্থায়ী হোক।
পংক্তি
আমিতো সক্ষম যে, কারো অন্তরে কষ্টই না দিতে
তবে হিংসুকদের কি করব আমি? তারা নিজেরাই চায় দুঃখ-কষ্ট পেতে
ওহে হিংসুক, তুমি বিনাস হও। কেননা হিংসা এমই যাতনা
যার কষ্ট থেকে মৃত্যু ছাড়া মুক্তি মিলেনা।
দুর্ভাগারা নিতান্তিই চায়-
সৌভাগ্যবানদের সম্পদ-সম্ভ্রম বিনাশ হওয়ায়
দিবালোকে যদি চামচিকা চোখে না দেখে
তাতে সূর্যালোকের কি দোষ বল আছে?
যদি তুমি সত্য শুনতে চাও (তাহলে বলছি) -
হাজারো অন্ধ ভাল সূর্যের আলোহীনতা থেকে, একথা জেনে নাও।